প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে এনআইডি ও ভোটার রেজিস্ট্রেশন উদ্বোধন

নিউইয়র্কঃ দীর্ঘদিনের দাবী—দাওয়ার পর অবশেষে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীদের বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। ফলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা প্রবাস থেকেও এনআইডি পাবেন এবং জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে তাদের ভোটও প্রয়োগ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ কার্যক্রমে নিবন্ধন হতে জন্মনিবন্ধন ও দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণে অধিক প্রমাণপত্র প্রদানের জটিলতা অনেকটাই কম রাখা হয়েছে। ফলে সহজেই নিবন্ধন ও ভোট প্রদান করতে পারবেন প্রবাসীরা। আর এজন্য কোন ফি প্রদান করতে হবে না প্রবাসীদের। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ সেবা প্রদান করবে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেট কার্যালয়ে। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, নিউইয়র্ক ছাড়াও ফ্লোরিডার মায়ামি ও ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলসের বাংলাদেশ কনস্যুলেটেও এনআইডি কার্ড প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে প্রবাসীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। খবর ইউএনএ’র।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে গত ৩ অক্টোবর শুক্রবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এনআইডি ও ভোটার নিবন্ধন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কনসাল জেনারেল মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক মিসবাহ উদ্দীন আহমেদ।
এনআইডি ও ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধনের আগে আখতার আহমেদ কনস্যুলেটে উপস্থিত প্রবাসীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, জন্ম নিবন্ধন, পিতা—মাতার এনআইডি, বাংলাদেশী পাসপোর্ট কিংবা নিজ ইউনিয়নের প্রত্যয়নপত্র ও ছবি সহ ফরম পূরণ করতে হবে। পরবর্তীতে দূতাবাসে কিংবা কনস্যুলেট গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের আইরিশ দিতে হবে। আর এসব প্রক্রিয়া শেষে দেশে আবেদনকারীর সকল তথ্য যাচাই করা হবে পূর্ণাঙ্গ নিবন্ধনের জন্য।
আখতার আহমেদ জানান, জন্ম নিবন্ধন, পিতা—মাতার এনআইডি, বাংলাদেশী পাসপোর্ট না থাকলেও বাংলাদেশের এনআইডি প্রাপ্ত যে কোন তিন ব্যক্তির প্রত্যয়নের মাধ্যমেও জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নিবন্ধন করতে পারবেন প্রবাসীরা। তিনি বলেন, নিবন্ধিত প্রবাসীরা ঘরে বসে পোস্টাল ব্যালট অ্যাপের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। স্মার্টফোন উপযোগী পোস্টাল ব্যালট অ্যাপ অক্টোবর মাসের শেষের দিকে অবমুক্ত করা হবে।
এ সময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিক ও প্রবাসী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন।
এদিকে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নিবন্ধনের উদ্বোধনী দিনে একাধিক প্রবাসী নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশ নেন। প্রথম দিনেই বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নিবন্ধন করতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন অনেকেই। তারা এজন্য অন্তর্বতী সরকারের উদ্যোগে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এমন কার্যক্রমে যাতে জটিলতা না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান শাহ্ নেওয়াজ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল লতিফ স¤্রাট ও জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ওয়াজেদ এ খান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মনজুর আহমেদ চৌধুরী, আব্দুস সবুর, আনোয়ারুল ইসলাম, কাজী আজম, ফিরোজ আলম, গোলাম ফারুক শাহীন সহ শতাধিক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে এনআইডি কার্ড প্রদানের কার্যক্রম উদ্বোধনঃ প্রবাসীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া
অপরদিকে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের এনআইডি কার্ড প্রদানের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গত ৫ অক্টোবর, রবিবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত তারেক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল এটিএম আবদুর রউফ মন্ডল।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ প্রবাসীদের সহজ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এনআইডি কার্ড প্রদান করা হবে বলে জানান। যার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত প্রবাসীরা ভোট প্রদান করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় ওয়েবসাইটে প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকে উপস্থিত ছিলেন।