অটো হোম হেলথ ইন্সু্যরেন্স রেট বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে ‘কার’

বাঙালী প্রতিবেদনঃ নিউইয়র্কে অটো বা গাড়ির ইন্সু্যরেন্স ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেককেই তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য করেছে। সাউথ এশিয়ান কম্যুনিটি এর বাইরে নেই। তাদের একটি কোয়ালিশন গভর্নর ক্যাথি হকুল এবং স্টেট সিনেটর ও এসেম্বলি সদস্যদের অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। এই সংগঠনের নাম সিটিজেন্স ফর এফোর্ডেবল রেটস (CAR)। তারা জানালো নিউইয়র্কে ৬টি দক্ষিণ এশীয়দের সংগঠন তাদের এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তারা হাজার হাজার ইমিগ্রান্ট ও ওয়াার্কিং ফ্যামিলিকে প্রতিনিধিত্ব করে। তারা জানিয়েছেন, যে কম্যুনিটিকে তারা গড়ে তুলেছেন এই আকাশচুম্বি মূল্যে তাদের জীবন অতীষ্ট হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য আমেরিকার জাতীয় গড় মূল্যের চেয়ে নিউইয়র্কে ক্রমবর্ধমান কার ইন্সু্যরেন্সের দাম ৪০% বেড়েছে। ফলে অভিভাবকদের এখন চিন্তা করতে হচ্ছে তারা গাড়ির ইন্সু্যরেন্স প্রিমিয়াম পে করবে নাকি গ্রোসারি কিনবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তাদের ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ কমার্শিয়াল ইন্সু্যরেন্সও আকাশচুম্বি।
সিটিজেন্স ফর এফোর্ডেবল রেটস, কার এর মুখপাত্র হোজে বেয়োনা বলেন, প্রতিদিনই আমরা দেখছি আমাদের নেবারহুডের পরিবারসমূহ হার্ট ব্রেকিং সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। একজন মা তার গাড়ির ইন্সু্যরেন্স পে করত হিমশিম খাচ্ছেন। অথচ কাজে যাওয়ার জন্য বা ছোট ছেলেমেয়েদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার গাড়ি রাখা দরকার। অলবেনি যখন এই ইস্যুটি থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে, তখন নেবারহুডের দুরাবস্থা অচিন্তনীয়। এটা শুধু কার ইন্সু্যরেন্স নয়, ওয়ার্কিং পরিবারগুলোর আমেরিকান ড্রিম পূরণের পথেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এমন দুঃসহ যে অনেক গ্রাসরুট সংগঠন এই কোয়ালিশনে যোগ দিচ্ছে। এখন আর্জেন্ট এ্যাকশন অত্যন্ত জরুরী হয়ে উঠেছে।
সাউথ এশিয়ান কম্যুনিটির বিভিন্ন সংগঠন ব্রুকলীন, কুইন্সসহ অন্য এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগঠনগুলোর অন্যতমঃ
● বাংলাদেশী আমেরিকান কম্যুনিটি ডেভেলপন্টে এন্ড ইয়ুথ সার্ভিসেস বা BACDYS। ব্রুকলীনভিত্তিক এই সংগঠনটি স্বল্প আয়ের বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট পরিবারগুলোকে শক্তিশালী করতে ইএসএল ক্লাস সহ আফটার স্কুল প্রোগ্রাম, নেচারালাইজেশন কোর্স, এফোর্ডেবল হাউজিং এ্যাসিস্ট্যান্স দিয়ে আসছে।
● কাউন্সিল অব পিপলস অর্গানাইজেশন বা COPO। এই সংগঠনটিও স্বল্প আয়ের ইমিগ্রান্ট পরিবারগুলোকে বিশেষ করে সাউথ এশিয়ান ও মুসলিম কম্যুনিটি শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সহায়তা দেয়। তারা গড়ে বছরে ৪৫,০০০ পরিবার ও ২৭,০০০ ব্যক্তিকে সাহায্য করে।
● হিউম্যান সাপোর্ট কোয়ালিশন। বাংলাদেশী কম্যুনিটির আর্থিকভাবে দুর্বল অংশকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
● ইন্ডিয়া হোমস ইনক। কুইন্স ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি ভারতীয় ও বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সিনিয়রদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অবস্থা উন্নয়নে কাজ করছে। এছাড়াও তাদের রয়েছে সোশাল সার্ভিস, হেলথ প্রোগ্রাম, কম্যুনিটি কানেকশন।
● প্রজেক্ট নিউইয়র্কার। সাদার্ন কুইন্সের দক্ষিণ এশীয় ইমিগ্রান্টদের জব ট্রেনিং, ফিনানশিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম ও ইমিগ্রান্ট এমপাওয়ারমেন্ট কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে।
● সখী ফর সাউথ এশিয়ান উইমেন। ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার হওয়া নারীদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে কাজ করে সখী। তারা সংবেদনশীল ক্রাইসিস ইন্টারভেনশন এবং এডভোকেসি সার্ভিস প্রদান করে নিউইয়র্ক সিটির সাউথ এশিয়ান কম্যুনিটির বিপুল সংখক নারীকে সুরক্ষা দিয়েছে।
এ বিষয়ে কিছু তথ্য দেয়া হলো। যেমন বার্ষিক অটো ইন্সু্যরেন্স প্রিমিয়াম ১৭০০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা জাতীয় ভিত্তিক রেটের প্রায় ৪০% বেশি। একইভাবে হোম ও হেলথ ইন্সু্যরেন্সও বেড়েছে।
প্রোপার্টি ইন্সু্যরেন্স প্রিমিয়াম বাড়ার কারণে বাড়ি ভাড়া ও মর্গেজ পেমেন্ট বেড়েছে। ভাড়ার সাথে এখন ইন্সু্যরেন্সের ১০—১৫% ইন্সু্যরেন্স যোগ করতে হচ্ছে। যানবাহন খাতে খরচ বৃদ্ধির জন্য অনেককে কাজ পাল্টাতে হচ্ছে বা একাধিক কাজ করতে হচ্ছে।
এইসব সমস্যার সমাধানে সিটিজেন্স ফর এ্যাফোর্ডেবল রেটস বা কার বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষদের নিয়ে উপরুক্ত সমস্যাসমূহ সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করা যেতে পারে— citizensforaffordablerates.com