যেভাবে অভিনয়ে হাসান মাসুদ
এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা হাসান মাসুদ। একের পর এক দর্শকপ্রিয় নাটকে দেখা গেছে তাকে। কাজ করেছেন চলচ্চিত্রেও। এরপর হঠাৎ করেই শোবিজ অঙ্গন থেকে হারিয়ে যান এ অভিনেতা। এখন আর পর্দায় তেমন দেখা মেলে না হাসান মাসুদের। সম্প্রতি হানিয়া আমিরকে নিয়ে মন্তব্য করে এসেছেন আলোচনায়। এবার জানালেন, আর অভিনয়ে ফিরতে চান না, একটা চাকরির খোঁজে রয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন হাসান মাসুদ। চাকরি প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, ‘আমি এখন একটা জব খুঁজছি। একটা জব পেলেই আমি জবে ঢুকে যাবো। সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক। সেটা সাংবাদিকতা হতে পারে। অ্যাডমিনিস্ট্রেশন হতে পারে। চেষ্টা করছি, হারিয়ে যাবো একেবারে।’ এক সময় সাংবাদিকতা করা হাসান মাসুদ পুরনো পেশায় ফেরার ইঙ্গিতও দেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকতায় ফেরার ইচ্ছা আছে, যদি সেরকম ভালো অফার পাই।
দর্শকদের উদ্দেশ্যে হাসান মাসুদ বলেন, আমার শুধু একটাই অনুরোধ দর্শকদের কাছে, আপনারা সবসময় অনেস্ট থাকবেন। সত্য কথা বলবেন। একটা প্রবণতা এখন খুব বেড়েছে, পরকীয়া করার। এটা থেকে আপনারা বিরত থাকবেন। তাহলেই আপনারা ভালো থাকবেন। সুখে থাকবেন।
২০০৪ সালে হাসান মাসুদকে প্রথম মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত 'ব্যাচেলর' সিনেমায় দেখা যায়। তাকে প্রথম নাটকে দেখা যায় এনটিভিতে প্রচারিত প্রেমের গল্প সিরিয়ালের একটি পর্বে। এটি নির্মাণ করেছিলেন মান্নান হীরা এবং এতে তার সহশিল্পী ছিলেন দীপা খন্দকার। পটুয়াখালীর বাউফল থানার মোমিনপুর গ্রামে জন্ম মসউদুর রহমান ও লায়লা মাসুদ দম্পতির সন্তান হাসান মাসুদের। তার স্ত্রী শিমুল এবং তার একমাত্র সন্তান সূর্য আমেরিকায় একটি ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছেন। তাকে ঘিরেই এখন হাসান মাসুদ ও শিমুলের স্বপ্ন। হাসান মাসুদের নিজের বাড়ি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি (বর্তমানে নেসারাবাদ থানা) নান্দুহার গ্রামে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ক্যাপ্টেন থাকাবস্থায় তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অবসর নেন। পরবর্তীতে ইংরেজি জাতীয় পত্রিকা নিউনেশন, ডেইলি স্টার এবং পরবর্তীতে বিবিসিতে চাকরি করেন তিনি। রাজধানীর শাহবাগের আজিজ মার্কেটে হঠাৎ একদিন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে পরিচয়ের পরপরই 'ব্যাচেলর' সিনেমায় কাজ করার সুযোগ হয়ে ওঠে। 'ছায়ানট' থেকে হাসান মাসুদ নজরুল সঙ্গীতের পাঁচ বছরের কোর্সও সম্পন্ন করেছিলেন। গান গাওয়ার জন্য নয়, গান শেখার জন্যই তিনি এই কোর্স সম্পন্ন করেছিলেন যাতে গলায় সুরটা আসে। একসময় উদীচীর গানের স্কোয়াড তিনিই লিড করতেন। ১৯৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে চলে যান। হাসান মাসুদের একমাত্র গানের অ্যালবাম 'হৃদয় ঘটিত' যার সব গান লিখেছেন মারজুক রাসেল এবং সুর করেছেন হাসান মাসুদেরই ক্লাসমেট প্রয়াত সঞ্জীব চৌধুরী।