যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ শহরে মুক্তি পেয়েছে ‘নীলচক্র’

যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছে আরিফিন শুভ ও মন্দিরা চক্রবর্তী অভিনীত সিনেমা ‘নীলচক্র’। গত কোরবানির ঈদে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল মিঠু খান পরিচালিত এই ছবি। দেশে মুক্তির পর প্রত্যাশিত সাড়া না পেলেও এবার ছবিটির গন্তব্য উত্তর আমেরিকার প্রেক্ষাগৃহ। ১৭ অক্টোবর শুক্রবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহরে দেখা যাচ্ছে ‘নীলচক্র’। যুক্তরাষ্ট্রের ২৪টি শহরে মুক্তি পেয়েছে পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান বায়স্কোপ ফিল্মস, যাদের মাধ্যমে এর আগে অর্ধশতাধিক বাংলা চলচ্চিত্র উত্তর আমেরিকায় প্রদর্শিত হয়েছে। এর বাইরে কানাডার একাধিক শহরেও মুক্তি পাবে ছবিটি।
বায়স্কোপ ফিল্মসর কর্ণধার রাজ হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রথম লাস ভেগাসে ছবিটির প্রিভিউ করি। এরপরই সিদ্ধান্ত নিই আমরা এটি বিপণন করব। মন্দিরা চক্রবর্তী নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের পরবর্তী সুপারস্টার হতে পারেন। আর ছবিটির প্লটও একেবারেই ভিন্নধর্মী—দর্শকদের মুগ্ধ করবেই।’
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অজানা জগত ও তার ভেতর লুকিয়ে থাকা বিপদ—ফাঁদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘নীলচক্র’। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন মিঠু খান ও নাজিম উদ দৌলা, প্রযোজনা করেছেন এনায়েত আকবর।
ওভারসিজ মুক্তি প্রসঙ্গে নায়িকা মন্দিরা চক্রবর্তী বলেন, ‘নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকার দর্শকেরা অনেকদিন ধরেই জানতে চাইছিলেন ছবিটি কবে আসছে। অবশেষে বায়স্কোপের উদ্যোগে আমরা ছবিটি নিয়ে যাচ্ছি তাদের কাছে। গল্পে যেমন বিনোদন আছে, তেমনি আছে এক শক্তিশালী সামাজিক বার্তাও।’
‘নীলচক্র’—এর অফিসিয়াল প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছে কিউ গার্ডেন সিনেমা হলে ১৭ অক্টোবর। ছবিটিতে শুভ ও মন্দিরা ছাড়াও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, মনির আহমেদ শাকিল, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ।
‘নীলচক্র’ সিনেমার অজানা কথা জানালেন শুভ
দেড় যুগ ধরে বিনোদন অঙ্গনে কাজ করছেন আরিফিন শুভ। বরাবরই ভিন্ন ভিন্ন গল্পে নিজেকে আনার চেষ্টায় থাকেন তিনি। এবারও যেন তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিজের ফেসবুক পেজে শুভ লিখেছেন, ‘আসলে সিনেমা তো অনেক ধরনেরই হয়। আমি বরাবরই চেয়েছি ভিন্ন ভিন্ন গল্পে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের ডাইমেনশন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হতে। যাতে নির্দিষ্ট কোন গণ্ডিতে বাঁধা পড়ে না যাই, সেই অভিপ্রায় থেকেই “নীলচক্র” সিনেমায় আমার যুক্ত হওয়া। সব ছবি যদি “মিশন এক্সট্রিম”, “ঢাকা অ্যাটাক”, “মুসাফির”, “ছুঁয়ে দিলে মন”—এর মতো হয়, তাহলে আপনারাই বিরক্ত হবেন। “নীলচক্র” আমার আগের করা সিনেমার চেয়ে অনেকটা আলাদা ধাঁচের।’
শুভ জানালেন, যাঁরা বাংলাদেশেরই অনেকের জীবনে ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা দেখতে চান। যাঁরা বাবা—মেয়ে, ভাই—বোন তথা সম্পর্কের গল্প দেখতে চান। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহে পৃথিবীতে এখন যে দুষ্টচক্র ঢুকে পড়েছে, কত কত পরিবার সেই চক্রের বলি হয়ে...পড়েছে—যে বাস্তব ঘটনাগুলো নিয়ে কেউ কথা বলতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না হয়তো! এমন গল্প যাঁরা দেখতে চান। ‘নীলচক্র’ সিনেমাটা আসলে তাঁদের জন্য বানানো। তা ছাড়া ঈদের ছবির একটা তথাকথিত ধরন থাকে। সেই ধরনের বাইরে গিয়ে তাঁরা ‘নীলচক্র’ ঈদে এনেও দর্শকের যে বিপুল ভালোবাসা পেয়েছেন, পাচ্ছেন...তাতে বিমোহিত!
আরিফিন শুভ বললেন, ‘পরিবারের অভিভাবক শ্রেণির লোকজন প্রচুর মেসেজ করছেন আমাকে। ভালোবাসা জানাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন “নীলচক্র” সিনেমাটা স্কুল—কলেজে বাধ্যতামূলকভাবে দেখানো উচিত। আপনাদের সবার এমন প্রতিক্রিয়া পেয়ে আমরা আসলে মুগ্ধ!’
‘নীলচক্র’ শুটিংয়ের সময় জীবনের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে আরিফিন শুভর। সেই বিষয়টিও তুলে এনেছেন ফেসবুক পোস্টে। তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা অনেকেই হয়তো জেনে থাকবেন, শুটিংয়ের সময় খুব বাজে সময় কাটাচ্ছিলাম আমি। শুটিংয়ের মাঝামাঝি সময়ে আমার মা পৃথিবী থেকে চলে যান। অতঃপর মা চলে যাওয়ার ৫/৬ দিন পর আমি নীলচক্রের বাকি শুটিং আবার শুরু করি। ওই অবস্থায় সিনেমার কাজ শেষও করি। আমার মানসিক ওই অবস্থায় এই বিশাল কর্মযজ্ঞে ছবির পরিচালক, প্রযোজক, আমার সহশিল্পী, কলাকুশলীরা যেভাবে আমাকে সাহায্য করেছেন, বিশেষ করে আমার ভক্তরা যেভাবে আমার পাশে ছিল, এখনো আছে...আমি আমৃত্যু ধন্যবাদ দিলেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন শেষ হবে না। আপনাদের সবার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ!’