আশিতে রেখা আহমেদ
যখন তিনি আশিতে তখনও তিনি থিয়েটারে
শামসুল আলম বকুল নিউইয়র্ক
লেখাটা রেখা আহমেদকে নিয়ে। সালটা ঠিক মনে নেই। তখন টেলিভিশন বলতে একমাত্র বিটিভি— বাংলাদেশ টেলিভিশন। বিটিভি’র মূল স্টুডিও রামপুরায়— যে কারণে রামপুরার নামটা তখন থেকেই মানুষের মুখে মুখে লেগে থাকতো। বিটিভির স্টুডিওতে একটা নাটকের শুটিংয়ে প্রথম রেখা আপার সাথে আমার পরিচয়। পরিচয়ের স্মৃতিটা আজ অনেকটাই আব্্ছা হয়ে এসেছে। সালটা মনে না থাকলেও আশির দশকের শেষের দিকের কথা। নাটকটির নামটাও আর মনে পড়ে না। একটু একটু মনে পড়ে নাটকটির প্রযোজক সম্ভবত ছিলেন আলাউদ্দিন আহমেদ অথবা নওয়াজিশ আলী। আমি তখনও টেলিভিশনের ‘বি’ গ্রেডের শিল্পী। আমাদের যাদের বিটিভি দিয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় অভিনয় শুরু তারা নিশ্চয়ই স্মরণ করতে পারছেন যে — বিটিভিতে অভিনয় করতে হলে তখন কন্ঠ এবং ক্যামেরা অডিশন দিয়ে পাশ করে বিটিভির শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে হতো। নয় থেকে দশ জনের অডিশন বোর্ড। তাদের মধ্যে কমপক্ষে সাতজন হ্যঁা বললে পাশ না হলে তার আর সে বছর শিল্পী হওয়া হলো না। আবার অপেক্ষা পরবতীর্ অডিশনের জন্য। সেটা দুবছর পরেও হতে পারে আবার পাঁচ বছর পরেও হতে পারে। যদি অডিশনে পাশ করো তাহলে তুমি প্রথম ‘সি’ বা ‘গ’ শ্রেণীর শিল্পী হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়ে কাজ শুরু করতে পারবে। এরপর তোমার অভিনয় মান ও দক্ষতার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যদি কোন সিনিয়র প্রযোজক তোমার শ্রেণী উন্নত করার জন্য প্রস্তাব করেন এবং অডিশন বোর্ডের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যদি তা অনুমোদন হয় তবে তোমার শ্রেণী পর্যায়ক্রমে উন্নত হবে। ‘গ’ থেকে ‘খ’ এরপর ‘খ’ থেকে ‘ক’ এবং ‘ক’ থেকে বিশেষ শ্রেণী। আমার প্রথম শ্রেণী উন্নীত হয়েছিলো ছ’মাসের মাথায়। তখনকার সিনিয়র প্রযোজক সৈয়দ মোস্তফা কামাল প্রযোজিত নাটক, নাট্যকার ছিলেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। নাটকের নাম ছিলো দ্বিতীয় জন্ম। এ নাটকে অভিনয় করার পর প্রযোজক আমার অভিনয় দেখে এতোটাই আপ্লুত হয়েছিলেন যে পরবতীর্ অডিশন বোর্ডের সভায় তিনি আমার শ্রেণী উন্নত করে ‘খ’ করার প্রস্তাব করেন এবং তা অনুমোদিত হয়ে ‘গ’ থেকে ‘খ’ হয় । আমি যখন ‘খ’ শ্রেণীর শিল্পী রেখা আপা তখন সম্ভবত ‘ক’ শ্রেণীর শিল্পী। শ্রেণী বিচারে রেখা আপা তখন একজন সিনিয়র শিল্পী। সে সময় সিনিয়র শিল্পীদের বিটিভিতে ভীষণ সম্মান দেওয়া হতো। আমরা জুনিয়র শিল্পীরা তো সম্মান করতামই প্রযোজকগণও তাদের সম্মান করতো। যাহোক ‘খ’ শ্রেণীর শিল্পী আমি তার ওপর তালিকাভুক্তির বয়স মাত্র ছয় মাস। সুতরাং বিটিভির শুটিং ফ্লোরে তখন আমার কোন দাপট নেই। শুটিংয়ের ফাঁকে নিজের জামা কাপড়ের ব্যাগটাকে ধরে ফ্লোরে অপেক্ষাকৃত নির্জন কোন স্থান নির্বাচন করে চুপচাপ বসে থাকা। সেদিন ফ্লোরের একটা সেট অনেকক্ষণ ফাঁকা থাকবে দেখে সেই সেটের একটা সোফায় অন্যান্য দিনের মত চুপচাপ বসে আছি আর মনে মনে আমার পরের দৃশ্যের সংলাপ মুখস্থ করছি। অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছিলাম রেখা আপা— আমাদের রেখা আহমেদ শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ঘুরে ঘুরে কথা বলছেন সবার সাথে। শুধু যে তিনি শিল্পীদের সাথে কথা বলছেন তা নয় সেটের সবার সাথে এমনকি প্রোডাকশন বয়ের সাথেও। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিলো রেখা আপা এতো কথা বলে চলেছেন সবার সাথে উনার কি নিজের অভিনয় নিয়ে কোন উত্তেজনা কাজ করছে না? দেখলাম একেবারেই না। শুটিংয়ের আগে চটপট পোষাক পাল্টে নিয়ে সহ অভিনেতাদের ডাকছেন— দ্রুত আওড়ে নিচ্ছেন সংলাপগুলো— মুহূর্তে চরিত্রের মধ্যে প্রবেশ করছেন এবং অবলীলায় শট দিয়ে চলেছেন। আমার কাছে সেদিন একটু অবাকই লেগেছিলো— সারাক্ষণ সবার সাথে অবিরাম কথা বলছেন এবং মুহূর্তে নিজের চরিত্রের মধ্যে প্রবেশ করে শট দিয়ে চলেছেন। অথচ বাকিরা পান্ডুলিপির পাতা হাতে নিয়ে শুটিং ফ্লোরের এ মাথা থেকে ও মাথা হাঁটছেন আর মনে মনে সংলাপ আওড়ে চলেছেন। সেদিন মনে মনে ভেবেছিলাম— অভিনয়ে রেখা আপার আত্মবিশ্বাস আমাদের থেকে যোজন যোজন ওপরে অবস্থান করে। যাহোক রাত তখন সাড়ে দশটা। শুটিংও প্রায় শেষের দিকে। উনি আমার পাশে এসে বসলেন এবং বললেন আপনার সাথে তো কথা হলো না। আপনার নাম? নতুন তালিকাভুক্ত হয়েছেন? কারণ এর আগে আপনাকে তো দেখিনি টিভিতে। মহিলা সমিতিতে দেখেছি কিন্তু টিভিতে এই প্রথম। উত্তরে আমি বলেছিলাম— আমাকে তুমি করে বলবেন আর আমি আপনাকে চিনি। আপনি থিয়েটারে কাজ করেন— মানে রামেন্দু দা’দের দলে। এরপর আরও কিছু কথা হলো। কিন্তু মনে হলো না যে আমি আজই তার সাথে প্রথম কথা বলছি। তার কথা বলার ভঙ্গী আর আন্তরিকতা দেখে মনে হচ্ছিলো অনেক কথা জমে আছে তার আমার সাথে বলার জন্য। মুহূর্তের ব্যবধানে মানুষে মানুষে দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলার এক অসাধারণ গুণ তার ভেতর আবিষ্কার করলাম সেদিন প্রথম আলাপেই। চল্লিশ পঞ্চাশ এমনকি ষাটের দশকে ভারতীয় উপমহাদেশে যাঁরা সাহিত্য বা সংস্কৃতি চর্চায় নিবেদিত প্রাণ ছিলেন তাঁদের অধিকাংশের মাঝে একটা প্রগতিশীল রাজনৈতিক মতাদর্শ কাজ করতো এবং এই রাজনৈতিক মতাদর্শের ওপর দাঁড়িয়েই তাঁরা সাহিত্য বা সংস্কৃতি চর্চা করতেন। কেউ কেউ সরাসরি রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত থাকতেন এবং তাঁর সকল সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে এর প্রতিফলন দেখা যেতো। রেখা আহমেদও এর বাইরে ছিলেন না। নিজ বাসায় দাদীর হাতে তার অভিনয়ের হাতেখড়ি। শিশুকালে দাদী তার নাতিদের অভিনয় শেখাতেন। সেই থেকে শুরু। ছোট চাচা ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য। তার রাজনৈতিক মতাদর্শই ধীরে ধীরে রেখা আহমেদকে প্রভাবিত করে ফেলে। প্রথম জীবনে বেশ কিছু নাটকে তাঁর স্পষ্ট ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৬৭ সালে নওগাঁয়ে মওলানা ভাসানীর জনসভা উপলক্ষে আলোর দিশারী নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর মঞ্চে পথচলা শুরু। এই নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন আরেকজন প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সর্বজন শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী। পরে এ নাটকের আরও কয়েকটি প্রদর্শনী হয় ঢাকার বংশালে এবং সোহরাওয়াদীর্ উদ্যানে। ছোট চাচার রাজনৈতিক মতাদর্শ আর কামাল লোহানীর সান্নিধ্যে মঞ্চ নাটকের পথ চলার কারণেই হয়তো তিনি একসময় সরাসরি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যোগদান করেন। সে সময় তিনি শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা নাট্যদল ক্রান্তিতে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৮ সালে চারজন বিখ্যাত কবি স্মরণে মহাকবি স্মরণোৎসবে চারণিকের হয়ে মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত বিখ্যাত প্রহসন বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ নাটকে পুঁটির চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই সময়ে আয়োজিত ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতিতে এ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিলো এবং পুঁটি চরিত্রটি দর্শক কর্তৃক সমাদৃত হয়েছিলো। এরপর শ্রদ্ধেয় বজলুল করিমের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ড্রামা সার্কেলে যোগদান করেন। এ দলে যোগ দিয়ে শ্রদ্ধেয় বজলুল করিমের সান্নিধ্য পাওয়ার কারণে নানা থিয়েটার কর্মশালার মধ্য দিয়ে তিনি আধুনিক নাট্যচর্চার অনেক কলা কৌশল রপ্ত করেছিলেন। যে কারণে রেখা আহমেদ তাঁর প্রথম নাট্য শিক্ষক হিসেবে শ্রদ্ধেয় বজলুল করিমের নামটি সম্মান আর কৃতজ্ঞতাভরে উল্লেখ করে চলেছেন আজও। ক্রান্তি, চারণিক এবং ড্রামা সার্কেল এর মঞ্চ ভ্রমণ শেষ করে ১৯৭২ সালে থিয়েটারে যোগদান করেন রেখা আহমেদ— যোগ দেন স্বাধীনতা উত্তর নাট্য আন্দোলনে। এরপর থেকে একের পর এক মঞ্চ নাটকে অভিনয় করে চলেছেন। আজ অবধি কতগুলো নাটকে কতবার মঞ্চে দর্শকদের সামনে দাঁড়িয়েছেন? এই প্রশ্ন শুনে অবাক বিস্ময়ে কিছুক্ষণ নিরব থেকে রেখা আপা বললেন এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। কারণ এমনও সময় গিয়েছে যখন ঘরে নাটকের পোষাকের ব্যাগটা গোছানোই থাকতো। মাসে ১৫/২০ রজনী মঞ্চে অভিনয় করতে হতো। সেই সাথে আবার টেলিভিশন নাটক। এ উত্তরটা শোনার পরে কারো অনুধাবন করতে নিশ্চয়ই অসুবিধে হচ্ছে না যে বাংলা নাটকের আজ যে খ্যাতি— তার পিছনে রেখা আপাদের কী অক্লান্ত শ্রম আর মেধা রয়েছে। ১৯৯০ সালে তিনি বিদেশে পাড়ি দেন। বসবাস করতে শুরু করেন ব্রডওয়ে খ্যাত বিশ্বরাজধানী নিউইয়র্ক শহরে। সেখানে তিনি প্রথমে খুঁজে পান মুজিব বিন হকের নেতৃত্বাধীন বাংলা নাট্য দল। সামনে পেছনে না তাকিয়ে আবার শুরু করে দেন মঞ্চাভিনয়। সেখান থেকে কিছুদিন পরে কাজ শুরু করেন ঢাকা ড্রামায়। আজ অবধি এ দলেই নিয়মিত অভিনয় করে চলেছেন। এ দলের হয়ে এ যাবৎ চৌদ্দ পনরটি নাটকে অভিনয় করেছেন। আমার সাথে মঞ্চে তার একটিমাত্র কাজ। ২০১৬ সালে ঢাকা ড্রামার প্রধান সারওয়ার হারুন বিশ্ব নাট্যদিবস উদযাপন উপলক্ষে একটি নাটক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানালে আমি তা সানন্দে গ্রহণ করি। সেটি ছিলো একটি স্বল্প দৈর্ঘ নাটক। নাটকটি ছিলো তপন দাস রচিত রিসার্চ। তৎকালীন বাংলাদেশের গণতন্ত্র চর্চাকে সমালোচনা করে লেখা। সে নাটকে দলের সদস্য হিসাবে তাঁকে অভিনয় করার জন্য আমন্ত্রণ জানালে তিনি খুশি হয়ে তা গ্রহণ করলেন এবং সেই কঠোর মহড়ার নিয়ম এবং সময় মেনে নিয়মিত উপস্থিত হয়ে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে চরিত্রটি মঞ্চ অভিনয় করলেন। আমি বিস্মিত হলাম— আমেরিকার এই কর্মময় কঠিন জীবন যাপনের মধ্য দিয়ে তিনি সেই বাংলাদেশে অনুশীলন করা মহড়ার নিয়ম নীতি আর অধ্যবসায় সব কিছু মেনে চলেছেন। তখন যে তাঁর বয়স সত্তরের ওপরে তা আমাকে বুঝতেই দিলেন না। সেই সাথে নির্দেশক হিসেবে তিনি আমাকে যে সম্মান দিলেন তাতে আমি অভিভূত। রাজনৈতিক মতাদর্শ আর নাটকের প্রতি রেখা আপাদের যে নিষ্ঠা তা আজও আমাদের অনুসরণীয়।
নাটক শেষে তিনি তার এক ইচ্ছার কথা আমাকে জানালেন। ‘বকুল বেলায় বেলায় বয়স তো অনেক হলো — কতদিন আর মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিনয় করতে পারবো জানিনা, তাই একটা ছোট্ট বাসনার কথা তোমায় জানাই। মঞ্চে এবার একটা একক অভিনয় করতে চাই। তুমি যদি নির্দেশনা দিতে আমি খুব খুশি হতাম।’ রেখা আপার এই বাসনা পূরণে আমি সম্মতি দিয়েছিলাম তৎক্ষণাৎ। কিন্তু দুঃখের বিষয় জীবিকার তাগিদে এর অল্প কিছুদিন পরেই আমাকে নিউইয়র্ক ছেড়ে কলোরাডোতে চলে যেতে হয়। প্রায় আট বছর পরে আমি আবার নিউইয়র্কে ফিরেছি। রেখা আপা এবার আশিতে পা দিতে যাচ্ছেন অথচ তিনি এখনো সেই বাসনা লালন করছেন— আমি পথ হাতড়ে চলেছি কি করে আশি বছর বয়স্ক একজন বর্ষীয়ান অভিনেতাকে পুনরায় দর্শকের সামনে দাঁড় করানো যায়। আমিও রেখা আপার মত আশা ছাড়িনি হয়তো একটা পথ পেয়ে যাব। তার চলাফেরা দেখলে বোঝা যায় যে পায়ে শক্তিটা কমে এসেছে। হাঁটতে কষ্ট হয়। কিন্তু কোনোভাবে যদি তার কানে পৌঁছানো যায় যে নিউইয়র্কে একটা বাংলা নতুন নাটক মঞ্চে আসছে— সাথে সাথে সে পা সচল হয়ে ওঠে। পায়ে যেন তিনি নতুন শক্তি খুঁজে পান। সেই শক্তি ফিরে পাওয়া পায়ে ভর করে ঘড়ির কাঁটা ধরে হেঁটে হেঁটে তিনি ঠিকই পৌঁছে যান তাঁর সারা জীবনের ভালবাসার নাট্য মঞ্চে। ঘুরে ঘুরে সবার খোঁজ নেন। তাঁর চোখ দুটো চক চক করে জ্বলে মিলনায়তনের আলোয়। সেই চোখে শুধুই তখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংলাপ বলার আকাংখা। হয়তো মনে মনে তার একটাই ভাবনা তখন তাকে তাড়া করে ফেরে ‘আবার যদি ফিরে পেতাম নড়াইলে জন্ম নেওয়া সেই ডানপিটে সেই শিশুকাল— আবার যদি ফিরে পেতাম ঝিনেদায় বেড়ে ওঠা সেই তারুণ্য— আবার যদি পুনর্জন্ম হতো আমার দাদী – পুনর্জন্ম হতো শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী কিম্বা নাট্য শিক্ষক বজলুল করিম অথবা থিয়েটারের আব্দুল্লাহ আল মামুনের তাহলে আরেকবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে দর্শকদের বলতাম আমি আমার ছোট চাচার প্রগতিশীল রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে পুনরায় ফিরে এসেছি আমার ভালবাসার থিয়েটার মঞ্চে।’ রেখা আপার আশিতে পদার্পন উপলক্ষে কৌশিক আহমেদ যখন আমায় রেখা আপাকে নিয়ে লেখার জন্য অনুরোধ করলেন তখন আমি রেখা আহমেদকে ফোন করে একটি প্রশ্ন করেছিলাম— আপনি কি আপনার ছোট চাচার প্রগতিশীল রাজনৈতিক আদর্শকে এখনো লালন করেন? ক্ষণকাল চিন্তা করে উনি দৃঢ় কন্ঠে বললেন ‘হ্যঁা— নাটক করেছি মানুষের জন্য— মানুষের মুক্তবুদ্ধির চর্চার জন্য— আজও নাটকের কথা মনে হলে অগণিত অনাহারী গায়ে খেটে খাওয়া মানুষের কথাই মনে পড়ে।’ রেখা আপা আপনাকে নাট্যশিল্পীদের পক্ষ থেকে কোটি কোটি শ্রদ্ধা সম্মান আর প্রাণঢালা ভালবাসা থিয়েটারে আপনার মেধা শ্রম আর সময় বিনিয়োগের জন্য।